বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক আমীর অধ্যাপক জসিম উদ্দিনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় আদেশ অমান্য করে সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে অধ্যাপক জসিম উদ্দিনের রুকনিয়াত বা সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জানা গেছে, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ময়মনসিংহ জেলা শাখা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখা হচ্ছে।
ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃঙ্খল দল। প্রতিষ্ঠার পর হতে অদ্যবদি পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে থেকে দলীয় শৃঙ্খলা অব্যাহত রেখেছে। আগামীতেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলীয় শৃঙ্খলার ব্যাপারে আপসহীন থাকবে।
জামায়াতের ময়মনসিংহ জেলা আমীর আব্দুল করিম বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক আমির অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিনের রুকনিয়াত (সদস্যপদ) বাতিল করেছেন এবং তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছেন। সাংগঠনিক নিয়মনীতি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সংগঠনের সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে অধ্যাপক জসীম উদ্দিনের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে লোক দিয়ে নিজের পক্ষ মিছিল করানোসহ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলে ভেতর গ্রুপিং করার অভিযোগে তার সদস্যপদ স্থগিত করে দলটি।
জানা গেছে, জামায়াত নেতা অধ্যাপক জসিম উদ্দিন ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে তিন দফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে প্রতিবারই পরাজিত হন। পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন সংগঠনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি।
দলীয় কর্মকাণ্ডে জসীম উদ্দিন নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে ২০২২ সাল থেকে কেন্দ্রের নির্দেশে ফুলবাড়িয়া উপজেলায় গণসংযোগ শুরু করেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নও পান তিনি।
এ দিকে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একটি অংশ আবারও অধ্যাপক জসিম উদ্দিনকে সামনে এনে সক্রিয় করে তোলে। স্থানীয় সাবেক শিবির নেতাদের একটি অংশ তাকে ঘিরে অবস্থান নেন। ‘ফুলবাড়িয়া ঐক্যবদ্ধ জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলও করা হয়। সেখানে অধ্যাপক জসিম উদ্দিনকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করার দাবি তোলা হয়। তবে সেই সময় জসিম উদ্দিন দাবি করেছিলেন তিনি ওই মিছিলের সঙ্গে জড়িত নন। সাম্প্রতিক সময়ে ভোটের মাঠে নামেন জসিম উদ্দিন। রোববার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার দল থেকে বহিষ্কার করা হল জসিম উদ্দিনকে।