1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রোজা ও পূজা নিয়ে মন্তব্য: জামায়াত প্রার্থী শিশির মনিরের বিরুদ্ধে মামলা বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ আটক স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্ক, নিঃর্শত ক্ষমা চাইলেন ময়মনসিংহের সেই চিকিৎসক চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা : ইসি সানাউল্লাহ কুকুরছানা হত্যা মামলায় সেই নিশির জামিন সাজসজ্জার নামে রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের জালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ আগারগাঁওয়ে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ধর্মের নামে দেশে বিভাজনের চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল কওমি মাদরাসার সনদধারীরা এখন থেকে কাজি হতে পারবেন: আসিফ নজরুল

সুস্থ হয়েও প্রতিবন্ধীর কার্ড বানালেন সরকারি কর্মচারী

রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

জামালপুরে শারীরিকভাবে সুস্থ একজন সরকারি কর্মচারী প্রতিবন্ধীর পরিচয়পত্র ব্যবহার করে দীর্ঘদিন থেকে সরকারের নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। তবে তিনি ভাতা উত্তোলন করেন না।

প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র ব্যবহারকারী ওই ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ নুরুজ্জামান (৪৬)। তিনি শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালক) জামালপুর শাখার এডুকেটর পদে কর্মরত আছেন।

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ঘোনারচালা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের সন্তান মুহাম্মদ নুরুজ্জামান।

মুহাম্মদ নুরুজ্জামান ১৯৭৫ সালের ২২ ডিসেম্বর সখীপুর উপজেলার কালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে ব্যবসা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সমাজ সেবা অধিদফতরের আওতায় শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে এডুকেটর পদে যোগ দেন ২০১৫ সালের ১২ জুলাই।

প্রথমে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে যোগদান করলেও পরে বদলি হয়ে আসেন জামালপুর জেলায়। সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মো. নুরুজ্জামানের শারীরিক প্রতিবন্ধীর পরিচয়পত্র ইস্যু হয় টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে। তার প্রতিবন্ধী আইডি নম্বর- ৯৩১৮৫৮১৯৬৮০৮৭-০২।

শারীরিকভাবে সুস্থ নুরুজ্জামান একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও নিজেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী দেখিয়ে প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করান। তবে তিনি যে প্রতিবন্ধী ভাতা পান তা কখনো উত্তোলন করেন না।

শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ একজন কর্মদক্ষ মানুষ হয়েও কী কারণে তিনি নিজেকে প্রতিবন্ধী দাবি করছেন, তা নিয়ে তার সহকর্মী ও স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

জেলার মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম প্রশ্ন তোলেন, একজন প্রতিবন্ধী কীভাবে এডুকেটর পদে কর্মরত আছেন? তিনি বলেন, ‘তিনি (মনিরুজ্জামান) যদি প্রতিবন্ধী হয়ে থাকেন তাহলে তিনি এই পদের জন্য যোগ্য নন বলে আমি মনে করি। বিষয়টি খুবই রহস্যজনক এবং চাকরিবিধি পরিপন্থী। তিনি চাকরিতে যোগদানের পূর্বে বিষয়টি উল্লেখ করেননি। তিনি ভাতা উত্তোলন করেন না, তাহলে কেন তার পরিচয়পত্র প্রয়োজন?’ সংশ্লিষ্ট দফতরকে ঘটনাটি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এই মানবাধিকার কর্মী।

টাঙ্গাইল জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলমের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই জটিল। মনিরুজ্জামান প্রতিবন্ধী কার্ড করেছেন কিন্তু ভাতা উত্তোলন করেন না। তবে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন। একটি দুর্ঘটনায় তার বাম হাত ভেঙে গেলেও হাতটি অচল না। আসলে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী কি-না, এই বিষয়টিও আমরা এখনো পরিষ্কার না।’

এ বিষয়ে মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বাড়িতে বড়ই গাছ থেকে পড়ে আমার বাম হাত ভেঙে যায়। তাই আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি কিন্তু কোনো দিন ভাতা উত্তোলন করিনি। আর ভবিষ্যতে কখনো ভাতা উত্তোলন করব না।’

ভাতা উত্তোলন না করে প্রতিবন্ধী কার্ড করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্যই আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি। যদি ভবিষ্যতে বড় অ্যামাউন্টের কিছু পাই, সেই আশায় আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করে রেখেছি।’

হাত ভাঙার তিন বছর পর প্রতিবন্ধী কার্ড করার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি সমাজসেবায় যোগদানের আগে প্রতিবন্ধী কার্ডের বিষয়ে জানতাম না। যখন জেনেছি তখনই প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি।’

একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এডুকেটর পদে সরকারি চাকরি করার জন্য যোগ্য কি-না, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি নুরুজ্জামান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মো. নুরুজ্জামানের কয়েকজন সহকর্মী বলেন, ‘আমরা কখনো জানতাম যে তিনি প্রতিবন্ধী বা তার প্রতিবন্ধী কার্ড রয়েছে। আসলে তাকে দেখে কখনো মনে হয়নি যে শারীরিকভাবে তিনি অক্ষম।’

এ বিষয়ে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালক) জামালপুর শাখার উপপ্রকল্প পরিচালক সুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের এই জায়গায় এখনো কয়েকজন প্রতিবন্ধী চাকরি করছেন। তাই মুহাম্মদ নুরুজ্জামানও এডুকেটর পদে চাকরি করতে পারেন। আর তিনি প্রতিবন্ধী হিসেবে কোনো ভাতা উত্তোলন করেন না এবং আমার এই জায়গা থেকে কোনো সুবিধা ভোগ করেন না।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি