বাসার সামনে আয়, ময়লা পানি রেডি আছে- ওসমান হাদির নির্বাচনী প্রচারণার পোস্টে এমনই কমেন্টস লিখেছিলেন একজন ভোটার। তার জবাবে ঠিকানা জানতে চেয়ে হাদী বলেছেন, ‘আমাদের বুকে গুলি চালানোর পূর্ব পর্যন্ত আমরা কাউকে কোনো প্রতিরোধ করবো না। আমরা আমাদের শত্রুর সঙ্গেও ইনসাফ চাই। আশা করি আপনার ময়লা পানি খাওয়ার পর আমরা একসাথে একদিন চাও খেতে পারবো। ইনশাআল্লাহ।’চরম শত্রুর সঙ্গেও ইনসাফের বার্তা দেওয়া সেই ওসমান হাদীই এবার শিকার হলেন বে-ইনসাফের। শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় জুমার নামাজের পর তাকে গুলি করে দুর্রৃত্তরা। গুরুতর অবস্থায় তিনি এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউতে। জানা গেছে, মোটরসাইকেল যোগে দুজন দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ওসমান হাদী মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। এখনো তার মাথায় গুলি রয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
ওসমান হাদী ছিলেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের একজন অগ্রসৈনিক। জুলাই আন্দোলনের থেকে ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রশ্নে বেশ বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন হাদী। যার কারণে বিভিন্ন সময় হুমকিও পেয়ে আসছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র।
গত ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে দেওয়া এক ফেইসবুক পোস্টে আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে হাদি লিখেছিলেন, ‘গত তিন ঘণ্টায় আমার মোবাইল নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টা বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে। যার সামারি হলো- আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দেবে। আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।’
সেই পোস্টে হাদি আরও লিখেছিলেন, ১৪০০ শহীদের রক্তের ঋণ মেটাতে কেবল আমার বাড়ি-ঘর না, যদি আমাকেও জ্বালিয়ে দেয়া হয়, ইনসাফের এই লড়াই হতে আমি এক চুলও নড়বো না, ইনশাআল্লাহ। এক আবরারকে হ’ ত্যার মধ্য দিয়ে হাজারো আবরার জন্মেছে এদেশে। এক হাদিকে হ’ ত্যা করা হলে তাওহীদের এই জমিনে আল্লাহ লক্ষ হাদি তৈরি করে দিবেন। স্বাধীনতার এই ক্রুদ্ধ স্বরকে কোনোদিন রুদ্ধ করা যাবে না। লড়াইয়ের ময়দানে আমি আমার আল্লাহর কাছে আরও সাহস ও শক্তি চাই। আরশ ওয়ালার কাছে আমি হাসিমুখে শহীদি মৃত্যু চাই। আমার পরিবার ও আমার কলিজার সহযোদ্ধাদেরকে আল্লাহ তায়ালার কুদরতি কদমে সোপর্দ করলাম। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে। হাসবিয়াল্লাহ।