1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন

সুমন-মদিনার সুখ পুড়লো আগুনে

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯ টা। ঘরের ভেতর তিন শিশু সন্তানকে রেখে বাইরে গিয়েছিলেন বাবা সুমন মিয়া। এরই মাঝে হঠাৎ ঘটে যায় এক বিস্ফোরণ। মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুনের লেলিহান শিখা। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ভালুকার সীডস্টোর বাজার এলাকায়।

বিকট শব্দ শুনে আশাপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখেন ঘরের ভেতর দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। শুরু হয় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। প্রায় ৪০ মিনিট পর তাদের সাথে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস। প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টার পর যখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ততক্ষণে পুড়ে আঙ্গার হয়ে যায় সুমনের বড় মেয়ে খাদিজা (৭), ছোট মেয়ে রাদিয়া (৫) ও দেড় বছর বয়সী একমাত্র ছেলে রায়হান।

সন্তানেরা যখন আগুনে পুড়ছিল, তখন পোশাক কারখানায় কাজে ছিলেন মা মদিনা। তিন মাস আগে কাজের সন্ধানে স্বামী-সন্তান নিয়ে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে ময়মনসিংহের ভালুকায় আসেন মদিনা। ভালুকা সীডস্টোর বাজার এলাকায় মাত্র দেড় হাজার টাকা ভাড়ায় টিনের একটি কক্ষে থাকতেন তারা। দুর্ঘটনার সময় পাশের তিনটি কক্ষ ছিল তালাবদ্ধ।

পাশের বাসার বাসিন্দা জহুরা খাতুন জানান, দুইমাস আগে ভালুকায় একটি পোশাক কারখানায় ১১ হাজার টাকা বেতনে চাকরি পান সুমনের স্ত্রী মদিনা। সুমনও টুকটাক দিনমজুরের কাজ করতেন। বেশি টাকা বাসা ভাড়া হওয়ায় ১৫ দিন আগে সিডস্টোর কাজী অফিস গলিতে দেড় হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় একটি টিন শেড বাসায় তিন সন্তান নিয়ে উঠেন সুমন-মদিনা দম্পতি।

পাঁচ রুমের টিন শেড ঘরের আরেক বাসিন্দা রাজু আহমেদ। ঘটনার সময় স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন স্ত্রীকে আনতে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। খোঁজ করছিলেন ওই তিন শিশুর। রাজু বলেন, পাশাপাশি রুম। সুমন-মদিনা কাজ থেকে দেরি করে আসলে বাচ্চাদের সাথে বেশ সময় কাটতো আমাদের।

রাজু আরও বলেন, সুমন-মদিনার অভাবের সংসারে সুখ ছিল কেবল ওই তিনটা শিশুই। সেই সুখও পুড়লো আগুনে। এই শোক তারা কিভাবে সইবে, বলতে বলতে চোখ বেয়ে পানি পড়ছিল রাজুর।

ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আল মামুন জানান, রাত সোয়া নয়টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে রওনা করি। আগুন লাগা বাসাটি অত্যন্ত সরু গলিতে থাকায় গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। ফলে দূর থেকে পাইপ টেনে পানি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উৎসুক জনতার ভীড়ে উদ্ধার কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়।

তিনি আরও বলেন, আগুনের ভয়াবহতা ছিলো অনেক বেশি। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাতেই তারা শিশুদের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নিয়ে গেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি