1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রোজা ও পূজা নিয়ে মন্তব্য: জামায়াত প্রার্থী শিশির মনিরের বিরুদ্ধে মামলা বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ আটক স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্ক, নিঃর্শত ক্ষমা চাইলেন ময়মনসিংহের সেই চিকিৎসক চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা : ইসি সানাউল্লাহ কুকুরছানা হত্যা মামলায় সেই নিশির জামিন সাজসজ্জার নামে রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের জালে সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ আগারগাঁওয়ে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ধর্মের নামে দেশে বিভাজনের চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল কওমি মাদরাসার সনদধারীরা এখন থেকে কাজি হতে পারবেন: আসিফ নজরুল

জামালপুরেও ‘১০ হাজার টাকার গুজব’! স্কুল-কলেজে ভিড়

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১

করোনাভাইরাস মহামারীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের বিজ্ঞপ্তিতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই। নীতিমালা ও শর্ত অনুসারে সবাই আবেদনের যোগ্যও না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়েছে সবাইকে অনুদান দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা করে।

সেই গুজবের রেশ ধরে শনিবার (৬ মার্চ) জামালপুরের সকল স্কুল-কলেজে প্রত্যয়নপত্র নিতে ভিড় করেছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের রেশ ধরে চলমান করোনা পরিস্থিতে উপচেপড়া ভিড় নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সবাইকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে শঙ্কা দেখা দিযেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাউশির বাজেট শাখা থেকে ১৮ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের জন্য সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে কত টাকার অনুদান দেওয়া হবে তা উল্লেখ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাউশির ওয়েবসাইটে আবেদন ফরম অপশনে ক্লিক করে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে সবার জন্য সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা বলা নেই। বলা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র ক্রয়সহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের জন্য, শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের দূরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনার সহায়তার জন্য এবং শিক্ষার্থী যারা দূরারোগ্য ব্যাধি, দৈব দুর্ঘটনা এবং শিক্ষাগ্রহণ কাজে ব্যয়ের জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে শিক্ষার্থীদের এ বিশেষ অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী, অসহায়, রোগগ্রস্ত, গরিব, মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

এই অনুদানের আবেদনের সময়সীমা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মাউশি সেই আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়েছে আগামীকাল (৭ মার্চ) পর্যন্ত। ২৮ ফেব্রুয়ারি সময় বাড়ানোরও ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমান কভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।

এদিকে মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে অনুদানের টাকার পরিমাণ উল্লেখ না থাকলেও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাউশি থেকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়েছে। এই অনুদানের টাকা পাওয়ার জন্য করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকা জামালপুরের সকল স্কুল-কলেজে শনিবার সকাল থেকেই প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার জন্য ভিড় করেছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। অনলাইনে আবেদনের নিয়ম থাকার পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহের গুজব ছড়ানোর কারণেই শিক্ষার্থীরা স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিড় করছে বলেও অনেকেই মনে করছেন।

শনিবার (৬ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে জামালপুর সরকারি জাহেদা সফির মহিলা কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, অন্ততপক্ষে পাঁচ হাজার ছাত্রী ভিড় করেছে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার জন্য। কলেজ ক্যাম্পাস, ক্লাসরুম, একাডেমি ভবনের বারান্দা থেকে শুরু করে কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। দেখা গেছে কম্পিউটারে টাইপ করা প্রত্যয়নপত্রের ফরম লেখায় ছাত্রীরা মহাব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রত্যেকটি ক্লাস রুমের বেঞ্চে বসে ছাত্রীরা অপেক্ষা করছে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার জন্য। এই পরিস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহ ও অন্যান্য শিক্ষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। যদি সব ছাত্রী তাদের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে যায় তাহলে রাত ১০টা পর্যন্ত দিলেও দেওয়া শেষ হবে না।

কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরেও কম্পিউটারের দোকানগুলোতেও প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শহরের সবগুলো কম্পিউটারের দোকানগুলোতে ব্যাপক ভিড় ছিল। শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও এসেছেন। তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মুখে মাস্ক নেই।

জামালপুর সরকারি জাহেদা সফির মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী মিম খাতুন বলেন, অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি দেখছি যে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দিবে সরকার। বিষয়টা নিয়ে আমার কাছে সন্দেহ হচ্ছে। কারণ সরকার তো পাগল হয় নাই যে দেশের সব শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দিবে। তারপরও সবাই আবেদন করতেছে। তাই আমিও করবো। আজকে প্রত্যয়নপত্র নিতে এসেছি।

তারজিনা আক্তার নামের আরেক ছাত্রী বলেন, আমার বন্ধুরা ফেসবুকে দেখেছে যে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দিবে আমাদের।

জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ, জামালপুর জিলা স্কুল, জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়, সিংহজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, সিংহজানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ শহরের সবগুলো স্কুল ও কলেজে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড় ছিল। এ ছাড়া জেলার মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়েও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারি জাহেদা সফির মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহ বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি আমরা দেখেছি। সেখানে অনুদানের টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই এবং বেশ কিছু শর্ত দেওয়া আছে। সেই শর্ত অনুযায়ী সবাই অনুদান পাবে না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছে ১০ হাজার টাকা করে পাবে তারা। কালকে (৭ মার্চ) আবেদনের শেষ সময় হওয়ায় আজকে সবাই ভিড় করেছে। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কলেজ বন্ধ থাকলেও আজকে যেভাবে শিক্ষার্থীরা ভিড় করেছে এটা সবার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তারা তো আমাদের শিক্ষার্থী। প্রত্যয়নপত্র নিতে এসেছে, আমরা প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছি। তাদেরকে তো আমরা না করতে পারি না। এর সময়সীমা আরো বাড়ানো দরকার। একই সাথে এই অনুদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব বন্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি