1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গফরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী শহীদ বেলাল পাঠাগার

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ, ২০২১

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী শহীদ বেলাল পাঠাগার ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। পোকার খাদ্যে পরিণত হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মহামূল্যবান বই। নড়বড়ে দরজা-জানালা আর মরিচা ও ঘুনপোকায় আলমারিগুলোও প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। পাশের রাস্তাটি প্রশস্ত হওয়ায় লম্বালম্বিভাবে প্রধান কক্ষের অর্ধেকটা ভাঙা পড়েছে। একটি কক্ষের জরাজীর্ণ টিনের চালার ওপর হেলে আছে দুটি গাছ। যেকোনো সময় ধ্বসে পড়তে পারে ভবনসহ। গত ঝড়ের সময় থানার বিশাল রেইন্ট্রি গাছ ভেঙে সীমানা প্রাচীর ধ্বসে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাংবাদিক শামছুল হকের কবরটি প্রায় নিশ্চিহৃ হয়ে গছে। দুর্লভ গ্রন্থগুলো রক্ষা ও পাঠাগারটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা না গেলে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটবে আলো ছড়ানো এই সংগঠনটির।

জানা যায়, আলোকিত সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে প্রয়াত সৎ সাংবাদিক শামছুল হক স্থানীয় ইসলামিয়া সরকারি হাইস্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আ. সালাম বিএসসি-এর সহায়তায় ১৯৬২ সালে মাত্র ৩০টি বই নিয়ে ‘সাধারণ পাঠাগার’ নামে পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করেন। শামছুল হক রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তরুণ ছাত্রনেতা বেলাল আহমেদকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বেলাল আহমেদ শহীদ হলে ১৯৭২ সালে পাঠাগারটির পুননামকরণ করেন ‘শহীদ বেলাল সাধারণ পাঠাগার’ এবং শিশু-কিশোর ও শিক্ষার্থীদের পাঠক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ৮০’র দশকে সহযোগী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন পদ্মপাপড়ি কচি কাঁচার মেলা।

পাঠাগার প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাংবাদিকতার পাশাপাশি বই সংগ্রহ করাই শামছুল হকের জীবনের একমাত্র ব্রত হয়ে ওঠে। সাংবাদিকতা আর পাঠাগারের জন্য বই সংগ্রহের নেশায় সংসার করেননি তিনি। এমনকি পৈত্রিক সম্পত্তি নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে ঢাকার ফুটপাত ঘুরে ঘুরে পাঠাগারের জন্য বই সংগ্রহ করেছেন। স্থানীয় শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি জগতে শামছুল হকের ছিল অসংখ্য ভক্ত। আত্মীয়-স্বজন ও ভক্তরা ভালোবেসে খাওয়ার জন্য, পোষাক-আসাক কেনার জন্য মাঝে-মধ্যে টাকা দিতেন তাও তিনি ঢাকার ফুটপাত ঘুরে দুর্লভ গ্রন্থ সংগ্রহে ব্যয় করতেন। কিন্তু শামছুল হকের মৃত্যুর পর অযত্ন-অবহেলায় সেগুলি নষ্ট হচ্ছে।

শামছুল হক ১৯৯৪ সালে সাংবাদিকতায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব পদক এবং ২০০৭ সালে ময়মনসিংহ জেলায় সাদা মনের মানুষ নির্বাচিত হন। তিনি আমৃত্যু সৎ সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিজের জীবনের নির্যাস দিয়ে (এই প্রতিবেদকসহ) অন্যের জীবনকে আলোকিত করেছেন, জ্ঞানের প্রদীপ জ্বেলেছেন।

২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি ব্রেনস্টোকে আক্রান্ত হয়ে শামছুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে শহীদ বেলাল পাঠাগারের আঙিনায় সমাহিত করা হয়। শামছুল হকের মৃত্যুর পর শহীদ বেলাল আহমেদের অনুজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলাল আহমেদ পাঠাগারটি নিয়ন্ত্রণে নেন। তখন থেকেই পাঠাগারটির সব ধরনের পাঠ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

শহীদ বেলাল পাঠাগারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হামিদ বাচ্চু বলেন, শামছু স্যারের সারা জীবনের শ্রম-সাধনায় গড়া শহীদ বেলাল পাঠাগার আজ ধ্বংস হতে চলেছে। মহা মূল্যবান দুর্লভ গ্রন্থগুলো নষ্ট হচ্ছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলাল আহমেদ বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হলেই ভাঙা কক্ষটি পুননির্মাণ করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পাঠাগারটি পরিদর্শন করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি