রংপুর চিড়িয়াখানার শিশু পার্কে ট্রেনের নিচে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পার্কের ভেতরে চলাচল করা বিনোদন ট্রেনের নিচে পড়ে প্রাণ হারায় শিশুটি।
নিহত শিশুটি লালমনিরহাট থেকে পরিবারসহ ঘুরতে এসেছিল চিড়িয়াখানায়।
চোখে ছিল আনন্দের ঝিলিক, হাতে বেলুন তবে এক মুহূর্তের অসাবধানতায় হারিয়ে গেল তার হাসি, থেমে গেল ছোট্ট জীবনের গতি। পরিবারের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা মুহূর্তেই উৎসবের পরিবেশকে পরিণত করে শোক ও আহাজারিতে।
হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুর বাবা বলেন, আমার ছেলে বাবু খেলছিল, আমি এক মুহূর্তের জন্য পেছনে তাকালাম। হঠাৎ দেখি ট্রেনের নিচে পড়ে গেছে। আমি কিছুই করতে পারিনি—সবকিছু চোখের সামনে ঘটেছে।
দুর্ঘটনার পর শিশুটিকে দ্রুত রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটির নাম জানায়নি তার পরিবার।
ঘটনার পর চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরে ট্রেন চলাচল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দর্শনার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, সেখানে সিগন্যাল ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা কার্যকর নয়। ফলে দর্শনার্থীরা বিশেষ করে শিশুদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
স্থানীয় দর্শনার্থী নুরুল ইসলাম বলেন, চিড়িয়াখানার ভেতরে ট্রেন চলে, কিন্তু কোথাও স্পষ্ট সতর্কতা বোর্ড নেই। কর্মীদেরও দেখা যায় না। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নজরদারিও সীমিত।
রংপুর মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর জানান, এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক দুর্ঘটনা। আমরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছি। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে দর্শনার্থীদের সচেতনতা এবং কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি জরুরি।
রংপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. মো. ওমর আলী বলেন, এমন ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। আমি দুর্ঘটনার সময় চিড়িয়াখানার ভেতরে ছিলাম না। পরে জানতে পারি শিশুটি লালমনিরহাট থেকে ঘুরতে এসেছিল। ঘটনাস্থলের রাইডগুলো ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করছিল। লাইন বা বগিতে ত্রুটি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।