গোপালগঞ্জ শহরের অলিগলিতে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব চরম আকার ধারণ করেছে। কুকুরের দলবদ্ধ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন পথচারী, স্কুলপড়ুয়া শিশু ও সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে পুরো শহরবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি কুকুরের তাড়া খেয়ে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা এই আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে শহরের মৌলভীপাড়ায় কুকুরের তাড়া খেয়ে ড্রেনে পড়ে সোহাগী (১২) নামে এক স্কুলছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাটি পুরো এলাকায় শোক ও তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।
শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দলবেঁধে বেওয়ারিশ কুকুরের অবাধ বিচরণ দেখা যায়। এসব কুকুর কখনও রাস্তায় শুয়ে থাকে, আবার কখনও ৫-৭টি বা ১০টিরও বেশি কুকুরের দল একসঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। এতে পথচারীরা প্রায়ই হামলার শিকার হচ্ছেন।
যেসব এলাকায় কুকুরের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি: নবীনবাগ, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এলাকা, বড়বাজার, পোস্ট অফিস মোড়, মিয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, মোহাম্মদপাড়া,লঞ্চঘাট এলাকা।
কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা নেওয়ার জন্য রোগীর ভিড় বাড়ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে: প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন মানুষ কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে টিকা নিচ্ছেন। শুধুমাত্র গত ১০ মাসে সদর হাসপাতাল থেকে দেড় হাজারের বেশি মানুষ জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা গ্রহণ করেছেন।
বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে স্থানীয়রা ২০১৪ সালের উচ্চ আদালতের রায়কে চিহ্নিত করেছেন, যেখানে কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
কুকুর নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে বন্ধ্যাকরণ কার্যক্রম (Sterilization Program) হাতে নেওয়া হলেও, স্থানীয়দের অভিযোগ—এই কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি, বরং কুকুরের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন বিপন্ন হচ্ছে।