
ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননা এবং সাইবার সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার হওয়া শামীম আশরাফকে (৩৮) কোতোয়ালি মডেল থানা হাজত থেকে আদালতে নেওয়ার পথে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হলে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ৫ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অভ্যন্তরীণ কারণে এবং দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ৫ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা কোতোয়ালি মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আল আমিন এবং চারজন কনস্টেবল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ কনস্টেবলদের নাম জানা যায়নি।
আদালত পরিদর্শক পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান জানান, গত ৭ অক্টোবর শুনানির জন্য আসামিকে আদালতে আনার পথে তার হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা দেখা যায়, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও প্রশ্নের জন্ম দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে এবং প্রাথমিকভাবে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পাঁচ সদস্যকে প্রত্যাহার করে।
এর আগে, গত ৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর আমলাপাড়া এলাকা থেকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ শামীম আশরাফকে আটক করে। এ ঘটনায় সদর উপজেলার চরআনন্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ইয়াসিন আরাফাত বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাইবার সুরক্ষা ও দণ্ডবিধি আইনে মামলা দায়ের করেন।
সূত্র জানায়, শামীম আশরাফ নিজের ফেসবুকের একটি পোস্টে শামীম চৌধুরী নামে একজনের একটি কমেন্টের পাল্টা জবাবে ‘ধর্ম অবমাননাকর’ মন্তব্য করেন। তার ফেসবুকের কমেন্ট ভাইরাল হলে শামীম আশরাফকে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে থাকে ধর্মপ্রাণ মানুষ। এতে স্থানীয় আলেম ও উলামাদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে, শামীম আশরাফকে গ্রেপ্তারের পর গত ৭ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঐদিন কোন রিমান্ড শুনানী না হওয়ায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফুল হক রিমান্ড শুনানি শেষে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।