শেরপুরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পালের জামিন ইস্যুতে জেলা জজ, পিপি ও জিপির অপসারণসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা।
রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে তাদের এই কর্মসূচি। শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে আদালতের প্রধান ফটক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবার ঘোষণা দিয়েছে— এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে জামিন ইস্যুতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল। সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ছয়টি মামলা হয়। পরে ভারতে পালানোর চেষ্টার সময় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর বেনাপোল সীমান্তে আটক হয়ে তিনি প্রায় এক বছর কারাগারে ছিলেন।
চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন পেলেও বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় ফের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর শেরপুর আদালত থেকে জামিন পান তিনি এবং কারামুক্তির পর এলাকা ছেড়ে চলে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
এর জেরে জেলা বিএনপির সভাপতি ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের ওপরও সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অপপ্রচারের অভিযোগ করেন। পাল্টা হিসেবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবাদ সম্মেলন করে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেয়, যার ধারাবাহিকতায় আজকের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
পরে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দাবিগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “লিখিত অভিযোগ দিলে আপনাদের দাবি গুলো আমি সরকারকে দ্রুতই জানাবো।”
ডিসির বক্তব্যের পর তারা ৭ দফা দাবি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে উপস্থাপন করেন। জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের বক্তব্যের ওপর বিশ্বাস রেখে তারা আজকের কর্মসূচি শেষ করেন।
৭ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে এর চেয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা।