1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

পাইলট হতে চায় বিমানে ওঠা সেই জুনায়েদ

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৯টি গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কুয়েতগামী বিমানে উঠে আলোচনায় আসা শিশু জুনায়েদের (১২) শিকল খুলে দেওয়া হয়েছে।

না বলে বাড়ি থেকে আর থেকে কোথাও বের হবে না এমন আশ্বাসে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শিশুটির পায়ের শিকল খুলে দিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা। শিশু জুনায়েদ এখন স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছে।

এর আগে গত বুধবার বিমানবন্দর থানা থেকে বের হয়ে বাড়ি ফিরে আবারও পালিয়ে যায় জুনায়েদ। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে ধরে এনে জুনায়েদকে শিকলবন্দি করা হয়। শিশুটিকে শিকলবন্দি করা নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলে দেওয়া হয় জুনায়েদের পায়ের শিকল।

গত সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৯টি গেটের নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিমানে উঠে যায় জুনায়েদ মোল্লা নামে এক শিশু। যা নিয়ে তোলপাড় হয় সারাদেশে। পরদিন মঙ্গলবার রাতে শিশুটিকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করে বিমানবন্দর থানা পুলিশ।

জানা যায়, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার প্রথম পক্ষের ছেলে জুনায়েদ মোল্লা। বেশ কয়েকবছর আগে মা অন্যত্র চলে যাবার পর সৎ মায়ের কাছে বড় হয় সে। তাকে ভর্তি করে দেওয়া হয় উপজেলার উজানী হাফিজিয়া মাদরাসায়। তবে বিভিন্ন সময় বাড়ির কাউকে না বলে বাইরে চলে যেত জুনায়েদ।

জোনায়েদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত রোববার সে বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে ইজিবাইকে করে মুকসুদপুর যায়। সেখান থেকে বাসে উঠে চলে যায় ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বসুন্ধরা হয়ে যায় এয়ারপোর্টে। পরে এয়ারপোর্টের ৯টি গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে সোজা উঠে পড়ে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের (কেইউ-২৮৪) রাত ৩টা ১০ মিনিটের একটি ফ্লাইটে। প্রায় ১ ঘণ্টার মত বিমানের সিটে বসে থাকার পর জুনায়েদ প্লেনের ভেতরে করিডোরে হাঁটাচলা করছিল। এ সময় কেবিন ক্রু জুনায়েদকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন শিশুটি একটি সিটে বসে পড়ে।এক পর্যায়ে জুনায়েদ যেই সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে। কিন্তু শিশুটি তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনোকিছু বলতে পারেনি।

এদিকে বিমানে উঠতে পেরেও উড়তে না পেরে আক্ষেপ নিয়ে জোনায়েদ বলে, বিমানে উড়তে পারলে ভালো লাগতো, বড় হয়ে একদিন বিমানে উড়ব।

জুনায়েদ আরও বলে, এখন থেকে ঠিকভাবে পড়াশোনা করব। পড়লেখা করে বড় হয়ে একদিন বিমানের পাইলট হব। আর সেদিন পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিমানে উড়ব।

বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় কেন গিয়েছিল জানতে চাইলে জুনায়েদ বলে, পড়াশোনার জন্য টাকা চাইলে বাড়ি থেকে মারত, তাই বিভিন্ন সময়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতাম। রোববার একটা কারণে আমার বাবা আমাকে মারধর করে পরে আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রথমে মায়ের (আপন মা) কাছে যাই। কিন্তু মা আমাকে বসতেও বলে নাই। পরে সেখান থেকে ঢাকায় চলে যায়। ঢাকা পৌঁছে প্রথমে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করি। পরের দিন সোমবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা থেকে এয়ারপোর্টে যাই। পরে সেখানে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে প্লেনে উঠে বসে পড়ি। আমি কোনো কিছু না বুঝেই শখের বসে বিমানে উঠে পড়ছিলাম। বিমানে উঠার পর আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এজন্য প্লেনের মধ্যে হাঁটাচলা করেছিলাম। পরে আমাকে প্লেন থেকে নামিয়ে প্রথমে একটা অফিসে পরে থানায় পাঠানো হয়।

জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, জুনায়েদ চলে যাবার পর খোঁজাখুঁজি করা হয় বিভিন্নস্থানে। পরে এয়ারপোর্ট থানা থেকে ফোন আসার পর আমরা তার খোঁজ পাই। পরে আমার ভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে জুনায়েদকে পুলিশের কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়ি এসে সকালে আবার পালিয়ে যায় জুনায়েদ। খুঁজে বের করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার শিকল খুলে দেওয়া হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি