ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের বিলডুরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে সামনে রেখে সেখানকার আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থীর ছয়টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে নৌকার প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ দুই পক্ষের ছয়জন আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটায় বিলডুরা ইউনিয়নের রাহেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় বিলডুরা ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ১১ নভেম্বর। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বিলডুরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি ছাড়া চেয়ারম্যান পদে আরও নয়জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আশরাফুল আলম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে টেবিল ফ্যান প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত আটটায় রাহেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীর হোসেন ও আশরাফুল আলমের সমর্থকদের মধ্যে ঝগড়া বাধে। এ সময় পথসভা থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন ১৫-২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জানতে চান। আশরাফুলের আলমের ভাতিজা মো. হুমায়ূন অতর্কিতে জাহাঙ্গীর হোসেনকে কিলঘুষি মারেন। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকদের হামলায় জাহাঙ্গীর হোসেন, তাঁর সমর্থক আজিজুল ইসলাম, রিজন মিয়া, সাইম মিয়া ও ফারুক আহমেদ এবং অপর পক্ষে আশরাফুল আলমের চাচাতো ভাই আবদুর রহিম আহত হন। এ সময় জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকেরা আশরাফুল আলমের কর্মীদের ছয়টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন।
পরে রাত ১০টায় আহত জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং আবদুর রহমানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আজ মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে গেছেন। জাহাঙ্গীরের নাক-মুখে ও শরীরে আঘাত থাকায় তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং আবদুর রহমানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমাকেও মারধর করা হয়েছে। আমার কর্মীর ছয়টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার চাচাতো ভাই গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ তাঁর কোনো ভাতিজা ও সমর্থক কাউকে কোনো আঘাত করেননি বলে আশরাফুল আলম দাবি করেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আশরাফুল আলমের ভাতিজাসহ ১০ থেকে ১২ জন আমার ওপর হামলা করেন। এতে আমিসহ পাঁচজন আহত হই। এ ব্যাপারে সাংসদ ও দলের সঙ্গে কথা বলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুজ্জামান খান আজ দুপুরে বলেন, অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।