প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হলে একসময়ের সহপাঠীকে বিয়ে করেন সাইফুল ইসলাম। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ২৬ মাস সংসার করার পর যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলার আসামি হয়েছেন তিনি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের প্রধান সাইফুল ইসলাম এক সপ্তাহ ধরে পলাতক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তার বিচার চেয়েছেন পলাতক শিক্ষকের স্ত্রী সোহেলী আক্তার।
জানা গেছে, ২০২০ সালের শুরুর দিকে শিক্ষক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর প্রথম স্ত্রী স্মৃতি রানী ভৌমিকের ছাড়াছাড়ি হয়। একই বছরের ১৬ জুন সোহেলী আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। এর পরও অন্য নারীর প্রতি আসক্তির কারণে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। স্বামীকে হারানোর ভয়ে রংপুর থেকে কর্মস্থল পরিবর্তন করে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন সোহেলী। এরপর শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে সোহেলী উল্লেখ করেন, রংপুরের একটি জমি বিক্রির প্রস্তাব না মানায় তার ওপর নির্যাতন চালাতেন সাইফুল। প্রতিনিয়ত তাকে তালাকের হুমকি দেওয়া হয়। গত ১৪ আগস্ট তাকে মারধর করেন সাইফুল। পরদিন রংপুরে বাবার বাড়ি চলে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসা শেষে নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৪ আগস্ট ময়মনসিংহের বাসায় ফেরেন তিনি। এসে দেখেন বাসাটি তালাবদ্ধ। বাড়িওয়ালা তাকে জানান, সাইফুল তাকে তালাক দিয়েছেন। তাই এ বাসায় তার থাকতে মানা। পরে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করেন।
গ্রেপ্তার আতঙ্কে ছুটির আবেদন ছাড়াই গত ২৮ আগস্ট ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। এ বিষয়ে জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী ছুটির আবেদন না করলে আমরা ধরে নিই, তিনি ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। তবে এখনও শিক্ষক সাইফুল ইসলামের ছুটির কোনো চিঠি বা আবেদন পাওয়া যায়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর জানান, শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে মামলার কোনো নথি পাননি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।