1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

ত্রিশালে নবজাতকের লাশ উদ্ধার, মা জেলহাজতে

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ৩৫ দিন বয়সী এক কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির নিথর দেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে ত্রিশাল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ রহস্যজনক ঘটনার ছায়াতদন্তে মাঠে নেমেছে পিবিআই, ময়মনসিংহ।

শিশুটির পারিবারের সূত্রে জানা যায়, শিশুর মা সোনিয়া আক্তার তাকে ঘুম পাড়িয়ে রান্না করতে যান। সঙ্গে রেখে যান তাঁর ৯ বছর বয়সী আরেক সন্তানকে। বড় শিশুটি পাশের কক্ষ থেকে মোবাইল ফোন আনতে গিয়ে ফিরে দেখে বোন বিছানায় নেই। বিষয়টি জানাজানি হলে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করে। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর তার নিথর দেহ পাওয়া যায় পুকুরের হাঁটুপানিতে। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

গত বুধবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নে এ ঘটনা। এ নিয়ে এলাকায় জিন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মারা যাওয়া শিশুটি সুমন মিয়ার মেয়ে তুবা (৩৫ দিন)। সুমন মিয়া স্থানীয় পোড়াবাড়ী বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী।

শিশুটির স্বজন আব্দুল বারেক মেম্বার বলেন, ‘এক থেকে দেড় বছর আগে এখানে থাকা একটি নারিকেল গাছ কাটার পর থেকে জিনের অত্যাচার বেড়ে গেছে। আমার এক চাচি জিনের আক্রমণে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিল। অনেক চিকিৎসার পর সুস্থ হয়েছে। বাচ্চার মা যখন আট মাসের গর্ভবতী ছিল তখন জিন যখন আছর করত তখন বলত, তর বাচ্চা দিয়ে দিতে হবে, তর বাচ্চা আমরা নিয়া নিব। এ কথা জানার পর বিভিন্ন জায়গায় কবিরাজ-মলনার কাছে বাচ্চার মাকে নিয়ে যাওয়া হলেও জিন হাজির হয়ে একই কথা বলত। আমাদের বাচ্চা মাইরা ফালাইছে নারিকেল গাছ কাইট্টা। বাচ্চা আমরা নিয়াই নিব। সবার সম্মতিতে এ রকম অবস্থায় বাচ্চার মাকে নিরাপত্তার জন্য তাঁর বাপের বাড়িতে কিছুদিনের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাচ্চা হওয়ার কিছুদিন পর সে বাচ্চাকে নিয়ে বাড়িতে এলে এ ঘটনা ঘটল।’

প্রতিবেশী হারুনুর রশীদ, সাইদুল ইসলাম, মাহমুদা আক্তারসহ আরও কয়েকজন একই ধরনের বর্ণনা দেন।

মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, বুধবার (২৩ মার্চ) সকাল ৯টায় শিশুটির বাবা সুমন পোড়াবাড়ী বাজারে ওষুধের দোকানে যান। দুপুর ১২টায় মায়ের নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় তুবাকে পাওয়া যাচ্ছে না। সুমন দ্রুত বাড়ির পথে রওনা হন। পথিমধ্যে ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম ফোনে জানান তুবাকে বাড়ির পশ্চিম পাশে পুকুরে পাওয়া গেছে। সুমন তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে গিয়ে তুবাকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে থানা-পুলিশ মরদেহ থানায় নিয়ে যায়

শিশুর বাবা সুমন বলেন, ‘আমরা সবাই নির্দোষ, আমার ওয়াইফেরে (স্ত্রীকে) অযথাই ধইরা নিয়া গেছে। আমার ওয়াইফের কোনো দোষ নাই। আমার বাচ্চা স্ত্রীর পেটে আসার সাত-আট মাস থেকেই জিনে বলছে, “আমাদের বাচ্চা নাই, বাচ্চা আমাদের দিয়া দে। আমরা নিয়া পালবাম। না দিলে তর বাচ্চা খেয়ে ফেলব।” আমরা অনেক কবিরাজ দেখাইছি। আমার স্ত্রীর কোনো দোষ নাই। একেবারে নির্দোষ।’

ত্রিশাল থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘মামলাটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর শিশুর মাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডও চাওয়া হয়েছে।’

পিবিআইয়ের ময়মনসিংহের ইন্সপেক্টর মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘আমরা পিবিআই ময়মনসিংহের একটি ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছায়াতদন্ত শুরু করেছি।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি