1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০১:০৩ অপরাহ্ন

শিক্ষা কর্মকর্তাকে চড় মারলেন মেয়র : মামলা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১
দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহ

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহর হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ। মেয়র সবার সামনেই তাকে চড় মারাসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি হাই স্কুল মাঠে শহীদ মিনার বেদিতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। মেয়রের এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এ ঘটনায় পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ভুক্তভোগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার তথ্য নিশ্চিত করেন দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন দেওয়ানগঞ্জ সরকারি হাই স্কুল মাঠে বিজয় দিবস উদযাপনের নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্কুল মাঠের শহীদ মিনারের বেদিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের লোকজন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ। সকাল ৭টার দিকে তিনি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনামতো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকা থেকে মাইকে একে একে নাম ঘোষণা করেন। এ সময় দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান।

মেয়র তার পৌর পরিষদের সবাইকে নিয়ে যথারীতি পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে শহীদ মিনার থেকে নেমেই তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মেহের উল্লাহকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘…. বাচ্চা, পৌরসভা কি ৫ নম্বরে ফুল দিবে?’ একই সাথে মেয়র সজোরে মেহের উল্লাহর গালে দুইবার থাপ্পড় মারেন। এ নিয়ে সেখানে বেশ হট্টগোল শুরু হয়ে গেলে মেয়র শাহনেওয়াজ শাহনাশাহ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমি উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া তালিকা দেখেই সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ঘোষণা করছিলাম। সেই তালিকায় দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নাম ৫ নম্বরে থাকা নিয়ে মেয়র আমার ওপর তেড়ে আসেন। আমাকে লক্ষ্য করে উপস্থিত সবার সামনেই মেয়র উচ্চৈঃস্বরে বলতে থাকেন ‘… বাচ্চা, পৌরসভা কি ৫ নম্বরে ফুল দিবে?’ এভাবে গালিগালাজ করতে করতে মেয়র আমার গালে সজোরে দুইবার থাপ্পড় মারেন। বিজয় দিবসের মতো মহান এই অনুষ্ঠানে সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় আমার সঙ্গে এ ধরনের আচরণে আমি খুবই বিপর্যস্ত এবং চরম অপমানিত হয়েছি। এ ঘটনার পরপরই বিষয়টি আমি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক মোর্শেদা জামান মহোদয়কেও জানিয়েছি। তিনি (জেলা প্রশাসক) আমাকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী আমি থানায় মামলা দিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামির গ্রেপ্তার ও তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোন করে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার শেফা বলেন, আমি শহীদ মিনারের বেদিতেই ছিলাম। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এ ধরনের অশালীন আচরণ করা হলে তারা কাজ করবে কিভাবে। মেয়র কাজটি ঠিক করেননি। এ ব্যাপারে ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমার কাছে অভিযোগ করেছেন।

দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝেও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ অত্যন্ত ঘৃণিত এবং ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি