ময়মনসিংহের ত্রিশালে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মোক্ষপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আশরাফ উদ্দিন বাদশা মাস্টার। গত একসপ্তাহে নৌকা সমর্থিত ৪/৫ জন কর্মীদের মারধর ও একাধিক বাড়িতে হামলা অভিযোগ করেন তিনি।
তৃতীয় দফায় গত ২৮ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে জয়-পরাজয়কে কেন্দ্র করে নির্বাচনের পরদিন রাত থেকে সহিংসতা ও ভাঙচুর শুরু হয়। এ হামলা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বিজয়ী চেয়ারম্যান শামছুদ্দিনের দুই ছেলে সন্ত্রাসী বাহিনী ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
নির্বাচনের পর সোমবার রাতে নৌকা সমর্থিত সেলিমের বসতবাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় নৌকা সমর্থিত কর্মীরা বলেন, তৃতীয় দফা ইউপি নির্বাচনে আশরাফ উদ্দিনের নৌকা প্রতীকের সমর্থক ছিলেন মাহাতাব উদ্দিন মাতু, সেলিম, চম্পা, উসমান। মোক্ষপুর ইউপির সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শামসুদ্দিন ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। নৌকার বিপক্ষে কাজ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শামসুদ্দিন দুই ছেলে। তাদের কথা মতো কাজ না করায় নির্বাচনে বিজয়ের পরের দিন দ্বন্দ্ব হয় নৌকা সমর্থিত মাহতাব উদ্দিন মাতুর সঙ্গে। এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামছুদ্দিনের সমর্থকরা নৌকার কর্মী সেলিমের বাড়ি ঘরে হামলা করে ও কর্মীদের মারধর করে। শামছুদ্দিন চেয়ারম্যানের দুই ছেলে স্থানীয় মালেকের মোড়ে আকরামের চাস্টলে মাহাতাব উদ্দিন মাতুর ওপর হামলা করেন। পরে স্থানীয়রা উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে।
আহত নৌকার কর্মী মাহতাব বলেন, চেয়ারম্যানের দুই ছেলে গুন্ডা বাহিনী নিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার না করলে একেবারেই মেরেই ফেলত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুদ্দীন ও নৌকা মনোনীত প্রার্থী বাদশা মাস্টার একই এলাকার। এ এলাকার লোকজনকে নৌকায় ভোট দিতে নিষেধ করেছিলেন শামছুদ্দিনের দুই ছেলে। নিষেধ অমান্য করে লোকজন নৌকায় ভোট দিয়েছে। এ কারণেই বহিরাগত সন্ত্রাসী ও তার দুই ছেলে তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে।
এ ব্যাপারে নৌকা সমর্থিত প্রার্থী বাদশা মাস্টার বলেন, প্রশাসন শক্ত ভূমিকায় থাকলে এত সহিংস ঘটনা ঘটত না। সন্ত্রাসীরা দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে। বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে, আগুন দিয়েছে, নৌকার সমর্থকদের মারধর করেছে। সন্ত্রাসীরা আমার কর্মীদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে যেন তারা থানায় কোনো অভিযোগ না করে।
বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী শামছুদ্দিন বলেন, নির্বাচনে পর এলাকায় মেম্বার প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আমি সবাইকে সাবধান থাকার নির্দেশ দিয়েছি যেন কেউ কোনো মারামারি না করে।
ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন বলেন, মারামারির ঘটনায় আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে আমি বিট পুলিশের কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি এলাকা এখন শান্ত।