ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায় নিজেকে ৪০তম বিসিএস ক্যাডারের এএসপি ভুয়া পরিচয় দিয়ে বিয়ে করতে গিয়ে থানা পুলিশের আটক হয়েছেন সোলাইমান কবীর (৩৫) নামের এক যুবক। গত সোমবার রাতে রুপসী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আটক হওয়া যুবক সোলাইমান কবির একজন প্রতারক বলে নিশ্চিত করেন থানা পুলিশ।
জানা যায়, উপজেলার রুপসী গ্রামে গত সোমবার রাতে অনার্স পড়ুয়া এক ছাত্রীকে বিয়ে করতে গেলে তার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে মেয়েটির পরিবার ফুলপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে তার সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয় তিনি ভুয়া পরিচয় দিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে সোমবার রাতে পুলিশ তাকে আটক করে গতকাল আদালতে পাঠিয়েছেন। সোলাইমান কবীরের বাড়ি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার কুচনিপাড়া গ্রামে। তিনি সেখানকার শাহ জাহানের ছেলে বলে জানা যায়।
ফুলপুর থানা ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, রুপসী গ্রামের ওই মেয়েটি শেরপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অনার্স ফাইনালের ছাত্রী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কবীরের সঙ্গে পরিচয়। সোলাইমান জানান, তিনি একজন ৪০তম বিসিএস ক্যাডার পুলিশের এএসপি। অনার্সপড়ুয়া মেয়েটিকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিলে মেয়েটি তার অভিভাবককে এ ঘটনা জানান। একপর্যায়ে প্রতারক সোলাইমান গত সোমবার রাতে এসে মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত হন। উপস্থিত সোলাইমানের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পরিবারের লোকজন ফুলপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে ফুলপুর থানার (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মোবাইলে কথা বলেন। এ সময় সোলাইমান নিজেকে পুলিশের এএসপি পরিচয় দিলে ওসি তার পোস্টিং কোথায় জানতে চান। উত্তরে প্রতারক সোলাইমান ময়মনসিংহ জেলায় বলে জানান। এ সময় ওসি’র কোনো ইউনিটে আছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতারক জানান, তিনি ইন্টার্নি করছেন। এসময় ওসি নিশ্চিত হন যে কবির ভুয়া পরিচয় দিচ্ছেন। তাকে অপেক্ষার অনুরোধ করে ওসি বলেন, আমি আপনার সাথে দেখা করতে আসছি। পরে সোলাইমানকে আটক করা হয়। আটককৃত কবিরের কাছ থেকে পুলিশের সরকারি বুট, মোবাইল সেট, মানিব্যাগ মেলে। গতকাল তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর আদালতে পাঠানো হয়।
জানা যায়, সোলাইমান পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি ভুয়া এএসপি পরিচয় দিয়ে ৩০-৩৫ জন মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করেছেন। এ অপকর্মের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন তিনি। জানা যায়, তার ফাঁদে পড়ছেন বেশিরভাগ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েরা।
ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যেসব মেয়েরা তার প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন তাদেরকে খুঁজে বের করে অভিভাবকদের সতর্ক করা হবে। সোলাইমান এসব মেয়েদেরকে উত্তরা ঢাকায় ৫তলা বাড়িসহ প্রচুর ধন-সম্পদের কথা জানাতেন। শেরপুর জেলার বাসিন্দা তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা যাতে এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে না পড়ে তিনি সকল অভিভাবকদের সতর্ক করেন।