মসজিদের দেয়াল ঘেঁষে পড়ে থাকা শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত শিশুর মা মোছা. চম্পা বেগম ওরফে রুমাকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজ আল আসাদের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেফতার চম্পা বেগম জামালপুর সদর উপজেলার আড়ালিয়া গ্রামের মৃত ইব্রাহিমের মেয়ে।
মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এর আগে সোমবার (১ মার্চ) ভোরে গাইবান্দা জেলার গোবিন্দাগঞ্জ উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘প্রায় ছয় বছর আগে জামালপুর সদর উপজেলার মুসকিনি গ্রামের মেয়ে চম্পা আক্তার ওরফে রুমার সঙ্গে বিয়ে হয় সাইফুল ইসলামের। সংসার জীবনে তাদের একটি মেয়ে সন্তান (সুচী) জন্ম হয়। সুচীর বয়স যখন চার মাস, তখন চম্পা তার স্বামী সাইফুল ইসলামকে তালাক দিয়ে অন্যত্র চলে যান। এর পর থেকেই সুচী তার দাদির কাছে বড় হয়। এর পর সাইফুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় সংসারেও রয়েছে দুটি ছেলে সন্তান।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চম্পার বরাত দিয়ে ওসি জানান, স্বামীকে তালাক দেয়ার পর থেকে চম্পা বগুড়া সদর উপজেলার ঘুন্ডিমোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। এ অবস্থায় গত একমাস আগে চম্পা বগুড়া থেকে জামালপুর গিয়ে কাউকে কিছু না বলে তার দাদির কাছ থেকে সুচীকে নিয়ে বগুড়া চলে যায়। কিন্তু সুচী বগুড়া তার মায়ের কাছে থাকতে রাজি না হলে তাকে প্রায়ই মারধর করত। ঘটনার দু-তিন আগে সুচী তার বাবার কাছে আসতে চাওয়ায় তার মাথায় আঘাত করে চম্পা। এক পর্যায় সুচী অসুস্থ হয়ে পড়লে বগুড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একদিন পর শিশুটি মারা যায়।
তিনি আরও জানান, পরদিন সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে চম্পা বাসযোগে ময়মনসিংহ মুক্তগাছা এনে মসজিদের কাছে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার পাড়াটঙ্গী শান্তির মোড় রহিমাতুল জান্নাত মসজিদের পাশ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন রাতেই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে চম্পার নামে মুক্তাগাছা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।