মার্কিন প্রেসিডেন্ট এশিয়া সফরে এসে মালয়েশিয়া ও জাপানের পর এবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছেন। তিনি সিউলে পৌঁছানোর ঠিক পরেই প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং উন যদি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান, তাহলে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে তাঁর অবস্থান দীর্ঘায়িত করবেন। তবে, জবাবে কিম কিছু না বলে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে ট্রাম্পকে ‘স্বাগত জানিয়েছেন’ বলে মনে করছেন অনেকে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম বিএনই ইন্টেলিনিউজের খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া নিশ্চিত করেছে যে তারা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএন জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি উল্লম্বভাবে ছোড়া হয় এবং প্রায় ১৩০ মিনিট পর্যন্ত উড়েছে। এই পরীক্ষা এমন এক সময়ে হল, যার ঠিক আগে ট্রাম্প এপেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছান। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ব্যাপকভাবে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতার সংকেত হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
এপেকের আলোচনার মূল বিষয় বাণিজ্য হলেও তবে অনেকের দৃষ্টি কিম জং উনের অনুপস্থিতির দিকে। জল্পনা আছে, হয়তো ট্রাম্প এই সফরে তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন, ২০১৯ সালের পর এটি হতে পারে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ। সম্প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্নে ট্রাম্প যে উত্তেজনা দেখিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে—কিম সাক্ষাতে রাজি হলে তিনি হয়তো দক্ষিণ কোরিয়ায় আরও কিছুদিন থাকবেন যদি এবং তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।
এ পর্যন্ত কিমের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। পরিবর্তে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘স্বাগত জানাতে’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মাধ্যম এই উৎক্ষেপণকে দেশটির শত্রুদের জন্য উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তির ‘স্মারক’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এই উৎক্ষেপণে জাতিসংঘের বিধিনিষেধ ভঙ্গ হয়নি। কারণ বিধিনিষেধে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নয়।
ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং-এর সঙ্গে আলোচনা করবেন। দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিনিময়ে শুল্কের হার ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামানো হবে। তবে, এই বিনিয়োগের কতটা সরাসরি নগদে হবে তা এখনও নির্ধারিত নয়। সিউলে উদ্বেগ রয়েছে যে, অত্যধিক বড় প্রতিশ্রুতি দেশের অর্থনৈতিক উপর চাপ ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, এই সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের বৈঠক হবে। তাঁরা দুজনেই গিয়ংজুতে থাকবেন, সেখানে নিরাপত্তা প্রস্তুতি ব্যাপক। তাঁদের জন্য নির্ধারিত কামরাগুলোতে বুলেটপ্রুফ কাঁচ বসানো হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণ বাড়ানো হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার নিরাপত্তা কর্মী, আর্মার্ড ভেহিকল এবং অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।