1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ

বদলাচ্ছে ১২৭ বছরের পুরোনো আইন, আসছে ‘ডাকসেবা অধ্যাদেশ ২০২৫’

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশের ডাকব্যবস্থায় আসছে যুগান্তকারী রূপান্তর। ১৮৯৮ সালের প্রাচীন ‘পোস্ট অফিস অ্যাক্ট’ বিলুপ্ত করে তৈরি হচ্ছে নতুন ‘ডাকসেবা অধ্যাদেশ, ২০২৫’, যা আধুনিক ডাকসেবা, ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থাপনা, উপাত্ত সুরক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা জোরদারে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, বাংলাদেশ ডাক আইন হালনাগাদ ও সংশোধন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ডাকের ডিজিটাল রূপান্তর, আধুনিক ঠিকানা ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঠিকানা স্থানান্তর, ব্যক্তিগত উপাত্তের নিরাপত্তা ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আইনটিকে সম্পূর্ণ নতুন রূপ দেওয়া হচ্ছে। এই আইনটির নাম হবে ‘ডাকসেবা অধ্যাদেশ, ২০২৫’, যা পূর্ববর্তী পোস্ট অফিস অ্যাক্ট, ১৮৯৮ কে প্রতিস্থাপন করবে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, সংশোধনীসমূহের মধ্যে বেশ কিছু যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। নতুন অধ্যাদেশে বাংলাদেশ ডাকের অধীনে একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি ‘নিয়ন্ত্রণ উইং’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই উইং বাণিজ্যিক ডাক ও কুরিয়ার অপারেটরদের লাইসেন্স প্রদান, সেবা নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে। নিয়ন্ত্রণ উইং ডাক ও কুরিয়ার খাতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা ও বৈষম্যহীনতা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ডাক সার্বজনীন সেবার জন্য প্রাপ্য সরকারি সংস্থান প্রতিযোগিতামূলক সেবায় ব্যবহার না করে— তার জন্য আলাদা হিসাব রাখার বাধ্যবাধকতা থাকবে।

বিশেষ সহকারী জানান, অবৈধভাবে ডাক বা কুরিয়ার ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে, যা পূর্বের সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকার সীমা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া, নতুন আইনে প্রচলিত ডাকটিকিটের পাশাপাশি চালু হচ্ছে ডিজিটাল ডাকটিকিট বা ই-স্ট্যাম্পিং। গ্রাহক অনলাইনে অর্থ পরিশোধ করে নিরাপদ ডিজিটাল কিউআর কোড বা বারকোড পাবেন, যা বৈধ ডাকটিকিটের সমান আইনি স্বীকৃতি পাবে। আর ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর সব নীতি ও অধিকার প্রযোজ্য হবে। অপারেটরদের গ্রাহকের তথ্য শুধুমাত্র সেবা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় তথ্য ধ্বংস এবং সাইবার নিরাপত্তার জন্য এনক্রিপশনসহ প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকবে।

একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ডিজিটাল সেন্ট্রাল লজিস্টিক্স ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম, যা সব অপারেটরের মধ্যে আন্তঃপরিচালন নিশ্চিত করবে এবং গ্রাহক সহজেই তাদের পার্সেল ট্র্যাক করতে পারবেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ডাক সেবাকে এখন থেকে জরুরি সেবা হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ডাককে অপরিহার্য বিবেচনা করে এই মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ফলে জাতীয় সংকটকালে ডাক যানবাহন ও কর্মীরা অগ্রাধিকারমূলক চলাচলের সুযোগ পাবেন।

বাংলাদেশ ডাকের নেটওয়ার্ককে দেশের জাতীয় অবকাঠামো হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে—যা যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক লেনদেনের মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রবাসী ভোটার ও ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তিনি জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধিত) আইন, ২০২৩ অনুযায়ী প্রবাসী ও অনিবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালট পরিবহনে ডাকসেবার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

একই সঙ্গে নাগরিকদের ঠিকানা ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ ও আর্কাইভিংয়ের উদ্যোগ থাকছে। এতে পরিবারভিত্তিক ফ্যামিলি-ট্রি ম্যাপিং, জিও-ফেন্সিং ও লাইফ-সাইকেল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঠিকানা সংরক্ষিত থাকবে। এমনকি জলবায়ু পরিবর্তন, নদীভাঙন বা চর বিলীন হওয়ায় ঠিকানা হারালে নতুনভাবে তা পুনঃনির্ধারণ করা যাবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি