1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
চিড়িয়াখানায় খাঁচার বাইরে সিংহ, নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কর্তৃপক্ষের আজ আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পেছাল জোবাইদা রহমানকে নিতে বিমানবন্দরে পৌঁছেছে গাড়িবহর গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কে’র দায়িত্ব পেলেন শহীদ গণহারে বদলি আদেশের পর শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত স্কুলের তালা ভেঙে প্রাথমিকের পরীক্ষা নিলেন ইউএনও ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা : জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সপ্তাহে তিনদিন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে চলবে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে সম্মতি কাতারের বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে মারল বিএসএফ

ফরিদপুরের একটি ফসলি মাঠ পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান!

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫

বিশ্বের বিস্ময় ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মানমন্দির নির্মাণের পুনরায় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি উঠেছে। এ দাবি জানিয়েছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। সারা পৃথিবীর আশ্চর্য, পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক স্থানগুলোর একটি হলো ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের ভাঙ্গারদিয়া গ্রামের ফসলি মাঠ।

পৃথিবীতে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত তিনটি রেখা আছে—কর্কটক্রান্তি, মকরক্রান্তি ও বিষুবরেখা। একইভাবে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত চারটি রেখা আছে—শূন্য ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১৮০ ডিগ্রি এবং ২৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা। চারটি উত্তর-দক্ষিণ রেখা এবং তিনটি পূর্ব-পশ্চিম রেখা মিলিয়ে ১২ জায়গায় ছেদ করেছে। এই ১২টি বিন্দুই পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিন্দু।

১২টি বিন্দুর মধ্যে ১০টি পড়েছে সাগর বা মহাসাগরে, তাই মানুষ সেখানে যেতে পারে না। একটি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে, যেখানে মানুষ যাওয়া দুষ্কর। কেবল একটি বিন্দু পড়েছে শুকনা মাটিতে, যেখানে মানুষ যেতে পারে। আর সেই বিন্দুটি পড়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের ভাঙ্গারদিয়া গ্রামের ফসলি মাঠে। এ কারণেই এ এলাকাটি পৃথিবীর এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

এই জায়গাটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিগত সরকারের সময় ভাঙ্গারদিয়া গ্রামে একটি মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ভাঙ্গারদিয়া গ্রামের বিল ধোপডাঙ্গা মৌজায় সোবহান মাতুব্বর, বারেক মাতুব্বর, ইকবাল মাতুব্বর, কুটিপাগলা, জাকির হোসেন, ইউসুফ মাতুব্বর, আজিজুল মাতুব্বর, শাহজাহান শেখ ও মোফাজ্জল হোসেনের প্রায় পাঁচ একর কৃষিজমি মানমন্দির প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।

স্থানীয়রা আশা করছেন, আন্তর্জাতিক মানের মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে কৃষিনির্ভর এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে, বদলে যাবে অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটার পাশাপাশি কয়েকগুণে জমির দামও বৃদ্ধি পাবে, যার সুফল ভোগ করবে সাধারণ মানুষ।

নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের বারেক মাতুব্বর বলেন, আমরা তো এটাকে কৃষি জমি হিসেবেই দেখেছি। এখানে যে এমন একটি বিষয় হয়েছে তা আমরা বুঝিই নাই। পরে প্রশাসনের লোকজন এসে আমাদের বলেছিল বিষয়টা।

তিনি বলেন, এই বিখ্যাত জায়গার পরিচিতি যাতে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য এলাকার সবাই সরকারকে জমি লিখে দিতে রাজি হয়েছিলাম। এখানে মানমন্দির হোক।

ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, ২০২১ সালে তৎকালীন একনেক সভায় মানমন্দির নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করবে। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল কর্কটক্রান্তি ও ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার সংযোগস্থলে মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য মহাকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা, মহাকাশ বিজ্ঞানচর্চার প্রসারে উৎসাহ দেওয়া, শিক্ষাবান্ধব বিনোদনের মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহ বাড়ানো এবং শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য মহাকাশ গবেষণার সুযোগ তৈরি করা। এছাড়া প্রস্তাবিত কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রনমি ও অ্যাস্ট্রোফিজিক্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের সুযোগ এবং বিভিন্ন ওয়ার্কশপও আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ উদ্যোগ বাতিল করা হয়।

ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর স্বপন কুমার হালদার বলেন, কর্কটক্রান্তি ও ৯০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার ছেদ বিন্দু ফরিদপুরে পড়েছে—এটি আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। এই ছেদ বিন্দুকে ঘিরে সরকারি উদ্যোগে একটি মানমন্দির হওয়া জরুরি। এর ফলে দেশের সম্মান বাড়বে। আমরা যেমন গ্রীনিচ মানমন্দিরের কথা জানি, যা বিশ্ববাসী অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। আমাদেরও উচিত দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ ওই স্থানে, যার উত্তরাধিকার কেবল বাংলাদেশের, সেখানে একটি মানমন্দির স্থাপন করা।

নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ছরোয়ার মাতুব্বর বলেন, এ কাজ যখন শুরু হয় সরকার জমি দিতে বলেছিল। আমরা রাজি হয়েছিলাম। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কয়েকবার কথাও হয়েছে। তবে পরে আর কোনো তৎপরতা দেখিনি। এখানে অবশ্যই একটি মানমন্দির হওয়া উচিত। এতে আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে, দেশ-বিদেশের লোকজনের সমাগম ঘটবে। আমরা চাই এ গ্রামে মানমন্দির হোক।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার ওই এলাকায় যদি মানমন্দির করা সম্ভব হয় তাহলে ওই অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিত বদলে যেতে পারে।এতে ওই এলাকার বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি পৃথিবীর অন্যতম বিরল সম্পত্তি মালিক হবে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, আমি ওই এলাকায় গিয়ে এলাকার মানুষের মতামত শুনে-বুঝে যদি তারা নতুন মান মন্দির চায় তাহলে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখব।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি