৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকা থেকে নিখোঁজ কলেজছাত্র হৃদয়ের (২০) মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টায় অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। ওই এলাকার তুরাগ নদীতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে এ উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। এতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।
নিহত কলেজছাত্র হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি কোনাবাড়ী এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন।
জানা গেছে, সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার পাশে গুলি করে ওই কলেজছাত্রকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলার পর পুলিশের কনস্টেবল মো. আকরাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উপস্থিতিতে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রমের প্রস্তুতি নেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ। উদ্ধার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘ডুবুরি দলের দল প্রস্তুত রয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে আমাদের ডুবুরি কড্ডার তুরাগ নদীতে নেমে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন।’
পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট হৃদয় কোনাবাড়ী সড়কে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি দেখে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। সেখানে দায়িত্ব পালন করছিলেন শিল্প পুলিশের কিছু সদস্য। তারা হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়-থাপ্পড় দেন। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি করলে সেখানেই তিনি মারা যান। এই ঘটনায় হৃদয়ের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনোবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে হুকুমের আসামি এবং অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়।