শরীয়তপুরের নড়িয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান রিপনকে গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে দিয়েছেন। গতকাল রোববার ফুলের মালা পরিয়ে দেন। আজ সোমবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়।
‘ফারুক আলম’ নামে এক ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘মাসুদুর রহমান রিপন প্যাদার এই একটাই গুণ, সে থানায় যায় না। ওসি তদন্ত স্যার তার কাছে আসেন শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। মন জুড়ানো একটি মুহূর্ত। শুভ কামনা মামা আপনার জন্য।’
ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শরীয়তপুর জেলার আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ‘২৪ পরবর্তী অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে আমরা দলীয় লেজুড়বৃত্তি, দলের দাস এমনকি কোনো দলের আধিপত্য বা তেলবাজি করবে এমন পুলিশ সদস্য চাই না। পুলিশকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। আমরা সবসময় চাই পুলিশের স্বাধীন কমিশন থাকবে। পুলিশ শুধু জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে এবং তাদের সেবা দেবে। নড়িয়ার ঘটনাটি অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘তার (মাসুদুর রহমান রিপন) সঙ্গে আমার আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক ছিল। তার আমন্ত্রণে দেখা করতে গিয়েছিলাম। পাশাপাশি সেখানে একটি মামলার তদন্তও ছিল। তখন দেখি অনেকেই ফুলের মালা দিচ্ছেন। অনেকে সঠিকভাবে মালা পরাতে পারছিলেন না, আমি পাশে বসে থাকায় মালা পরিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলাম। তখন হয়তো কেউ ছবি তুলেছে।’
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, ‘পুলিশ সদস্য হয়ে এমন কর্মকাণ্ড করার সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে শরীয়তপুরে এক ব্যবসায়ী আবু জাফরকে থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহমেদ। পরে তাকে বদলি করে নড়িয়া থানায় তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।