1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন

পাসপোর্ট ছাড়া যেভাবে শিশুটি প্লেনে উঠেছিল

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাস ছাড়া কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়া শিশুটির পরিচয় পাওয়া গেছে। ১২ বছর বয়সী ওই শিশুটির বাড়ি গোপালগঞ্জে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ে। গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) শিশুটি একাই মুকসুদপুর থেকে রাজধানীর বসুন্ধরায় তার ফুফুর বাসায় আসে। বাসে প্রথমে সে গাজীপুর আসে। সেখান থেকে একটি ডাবল ডেকার বিআরটিসি বাসে বিমানবন্দর চলে আসে। উদ্দেশ্য বিমানবন্দর ঘুরে দেখা।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ১২ বছরের ওই ছেলেটির বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর এলাকায়। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ে। ওই দিন মুকসুদপুর থেকে সে একাই ঢাকা চলে আসে। প্রথমে গাজীপুর যায়। পরে সেখানে থেকে বিআরটিসি বাসে করে ঢাকা বিমানবন্দর দেখতে আসে। সেখানে এসে একা ঘুরতে থাকে। একসময় কোনও বাধা ছাড়াই বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকে যায়।

তিনি আরও বলেন, সে মূলত রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় তার ফুফুর বাসায় বেড়াতে এসেছিল। ঢাকায় এসে ফুফুর বাসায় না গিয়ে সরাসরি বিমানবন্দর দেখতে চলে যায়।

তিনি বলেন, যেভাবে বিমানবন্দরের ভেতরে চলে গেছে, তাকে কেউ আটকায়নি, কারও চোখে পড়েনি। তাকে না আটকানো বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীন কাজ। থানায় নিয়ে আসার পর শিশুটির কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে (কেইউ-২৮৪) যাত্রীরা উঠেছেন, চলছে উড্ডয়নের প্রস্তুতি। ১০ বছর বয়সী একটি শিশু ওই ফ্লাইটে দাঁড়িয়ে থাকলে কেবিন ক্রুরা তাকে বসতে বলেন। তখন শিশুটি ফ্লাইটের একটি সিটে বসে পড়ে। তবে সেই সিটের যাত্রী এলে কেবিন ক্রুরা তার সঙ্গে কেউ আছে কিনা জানতে চায়, তারা তাকে বাবা-মায়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করে, তার বোর্ডিং কার্ড, পাসপোর্ট দেখতে চায়। তখন শিশুটি কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নীরব ছিল। একপর্যায়ে কেবিন ক্রুরা যাত্রীসংখ্যা গণনা করলে একজন যাত্রী বেশি পাওয়া যায়। পরে প্যাসেঞ্জার লিস্ট চেক করে দেখা যায়, নির্ধারিত যাত্রীর মধ্যে শিশুটি নেই। পরে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে কেবিন ক্রুরা শিশুটিকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) কাছে হস্তান্তর করেন। তবে শিশুটি সঠিক উত্তর দিতে না পারায় তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে এভসেক।

ওইদিন রাতে শিশুটিকে তার চাচা ইউসুফ মোল্লার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জোনায়েদের চাচা ইউসুফ মোল্লা জানান, দশ বছরের শিশু জুনায়েদ মোল্লা। সে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার কৃষক ইমরান মোল্লার ছেলে। সে স্থানীয় মাদরাসায় পড়াশোনা করতো। তারা দুই ভাই ও এক বোন।

পড়াশোনার জন্য চাপ দিলে এবং মাদরাসায় যাওয়ার কথা বললেই বাসা থেকে পালিয়ে যেত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত এক সপ্তাহ আগে জুনায়েদ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দর থানা পুলিশের মাধ্যমে পরে ভাতিজাকে খুঁজে পেলাম।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়েছে। শিশুটি বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীর গাঘেঁষে অবস্থান করছিল, যাতে মনে হচ্ছিল সে তাদের একজন। এভাবে সে বিমানবন্দরের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে হজযাত্রীদের একটি গ্রুপের সঙ্গে থেকে সে ফ্লাইটে উঠে পড়ে।

এ ঘটনায় বিমানবন্দরের ১০ জন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় কুয়েত এয়ারওয়েজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনাকে আমরা হালকাভাবে নিচ্ছি না। এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি